শেখ মোস্তফা কামাল,কেশবপুর প্রতিনিধিঃ যশোরের কেশবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে স্কুল শিক্ষার্থীরা কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন (করোনা টিকা) দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বখাটেরা বাসের গতিরোধ করে ভিতরে প্রবেশ করে হামলা চালিয়ে পাঁচ শিক্ষার্থীকে গুরুতর আহত করেছে। শুধু তাই নয়, ওইসময় কয়েকজন ছাত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। আতঙ্কে ২০ জন ছাত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। হামলাকারীদের হেনস্তা এবং মারপিটের হাত থেকে শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে গিয়েও হামলার শিকার হয়েছেন গ্রাম পুলিশ লিয়াকত হোসেন। তাকেও বেধড়ক মারপিট করায় জ্ঞান হারায়। গত মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে পাঁজিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরের সামনে ঘটনাটি ঘটেছে। খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘটনার সাথে জড়িত খায়রুল হোসেন ও ইলিয়াস হোসেন নামের দুই যুবককে আটক করে। ঘটনা উল্লেখ করে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাদি হয়ে কেশবপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলা ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, কাটাখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ৭৮ জন ছাত্রী নিয়ে বাসযোগে কেশবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন দিতে। টিকা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথিমধ্যে পাঁজিয়া এলাকায় পৌঁছালে একজন অপরিচিত ছেলের সাথে চালকের কথা কাটাকাটি হয়। এসময় বড় মাদারডাঙ্গা গ্রামের মুক্তার মহলদারের ছেলে ইলিয়াস মহলদার, মুন্না মহলদার, এখলাসুর রহমান, ইয়াসিন হোসেনের ছেলে খাইরুল ও আব্দুল্লা, আব্দুল হাকিমের ছেলে শাকিল, হামিদ গাজীর ছেলে বাপ্পারাজ ওরফে বাপ্পাসহ একদল বখাটেরা পথরোধ করে বাসের ভিতরে প্রবেশ করে ড্রাইভার, হেল্পার, শিক্ষক সহ একাধিক ছাত্রীকে এলাপাতাড়ি মারধর ও হেনস্তা করে। ওইসময় গ্রাম পুলিশ ঠেকাতে গেলে তাকেও বেধড়ক মারপিট করে। বখাটের হামলায় আহত হন স্কুলছাত্রী জুঁই বিশ্বাস, শিক্ষক উজ্জ্বল বৈরাগী, মহেন্দ্র নাথ, শিক্ষিকা রাখি ঢালি, শিক্ষার্থী ইয়াসমিন, প্রিয়া মণ্ডল, কেয়া মণ্ডল, তাহমিনা খাতুন, শ্রাবণী মণ্ডল। এ সময় আতঙ্কে প্রায় ২০ জন ছাত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। কয়েকজন ছাত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। গুরুত্বর আহত অবস্থায় জুঁই মণ্ডলকে কেশবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। অন্য আহত ছাত্রীদের পাঁজিয়া বাজারের ডাক্তার দ্বারা প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। এব্যাপারে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ বোরহান উদ্দীন বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দুই হামলাকারিকে গ্রেফতার করা হয়। থানায় একটি মামলা হয়েছে। বুধবার সকালে গ্রেফতারকৃত আসামীদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারের জন্যে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।